টানা চার পরাজয়ের পর টুর্নামেন্টে নিজেদের দ্বিতীয় জয়ের খোঁজে আজ  নেদারল্যান্ডসের মুখোমুখি হয় বাংলাদেশ। এমন ম্যাচে আগে ব্যাট করতে নেমে টাইগারদের বোলিং তোপে ২২৯ রানে গুটিয়ে যায় এডওয়ার্ডসের দল। সেই লক্ষ্য তাড়া করতে নেমে ডাচদের বোলিং তোপে ৪৭ বল হাতে রেখেই ১৪২ রানে গুটিয়ে যায় সাকিব বাহিনী। আর এতেই ৮৮ রানের দুদার্ন্ত জয় পায় নেদারল্যান্ডস।

টস জিতে ব্যাট করতে নেমে শুরুতে নেদারল্যান্ডস ভালো করতে পারেনি একদমই। বাংলাদেশও দ্রুত পায় পায় সাফল্য। ৯ বলে ৩ রান করে বিক্রমজিৎ সিং ক্যাচ দেন তাসকিন আহমেদের বলে সাকিব আল হাসানের হাতে। পরের ওভারেই আরেক ওপেনার ম্যাক্স ও ডাউডকে ফেরান শরিফুল ইসলাম।

৩ বলে কোনো রান করার আগেই তার অফ স্টাম্পের বাইরের বলে শরীর দূরে রেখে ব্যাট চালিয়ে ক্যাচ দেন স্লিপে দাঁড়ানো তানজিদ হাসানের হাতে। শুরুর ওই ধাক্কা কিছুটা হলেও সামলে নেন ওয়েসলি বারেসি ও কলিন আকারম্যান। কিন্তু খুব লম্বা সময় চালিয়ে নিতে পারেননি তারা।

এ দুজনের ৫৯ রানের জুটি ভাঙেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৮ চারের ইনিংসে ৪১ বলে ৪১ রান করা এই ব্যাটার ক্যাচ দেন সাকিব আল হাসানের হাতে। পরের ওভারে এসেই ৩৩ বলে ১৫ রান করা কলিন আকারম্যানকে আউট করেন সাকিব, এবার ক্যাচ নেন মোস্তাফিজ।

দুজনের বিদায়ের পর ডাচদের হাল ধরেন স্কট এডওয়ার্ডস। তার দুটি ক্যাচ ছাড়েন লিটন দাস ও মুশফিকুর রহিম। বাংলাদেশ ক্যাচ ছাড়ে পরেও। এই ফাঁকে হাফ সেঞ্চুরি তুলে নেন এডওয়ার্ডস। ৬ চারে ৮৯ বলে ৬৮ রান করা এই ব্যাটার আউটও হন ক্যাচ দিয়েই।

মোস্তাফিজুর রহমানের ওয়াইড ইয়র্কারে ব্যাকওয়ার্ড পয়েন্ট অঞ্চলে ক্যাচ দেন তিনি, সেটি ধরতে আর ভুল করেননি মেহেদী হাসান মিরাজ। তার সঙ্গী হিসেবে থাকা সাইব্রান্ডন্ড এঙ্গেলব্রেখটকে ৬১ বলে ৩৫ রান করার পর এলবিডব্লিউ করেন মাহেদী হাসান।

নেদারল্য্যান্ডসের রান দুইশ ছাড়ানো রানের স্বপ্নটাও স্থিমিত হয়ে আসে। কিন্তু লোগান ফন বিক আলো ছড়ান তাতে। তার ২ চার ও ১ ছক্কায় ১৬ বলে ২৩ রানের ইনিংস নেদারল্যান্ডসের রানকে নিয়ে যায় দুইশ ছাড়িয়েও বেশ খানিকটা দূরে।

রান তাড়ায় শুরুতেই বিদায় নেন ওপেনার লিটন দাস। দলীয় ১৯ রানের মাথায় উইকেটের পেছনে ক্যাচ দিয়ে বিদায় নেন লিটন (৩)। ডাচদের পরের শিকার তানজিদ তামিম। পরের ওভারেই মাঠছাড়া হন তামিম। জোড়া ধাক্কা খাওয়ার পর নাজমুল হোসেন শান্তও পারলেন না হাল ধরতে। পুরো বিশ্বকাপে ভুগতে থাকা শান্ত আজ বিদায় নিলেন ৯ রান করে।

দলের বিপদে যথারীতি হতাশ করেছেন সাকিবও। অধিনায়ক অবশ্য উইকেট উপহার দিয়ে আসলেন। ডাচ বোলার পলের অফ স্টাম্পের বাইরের বাউন্স বল চাইলে অনায়সে ছেড়ে দিতে পারতেন অধিনায়ক। সেটা না করে মারলেন খোঁচা। আর আউট হয়ে ফিরলেন ৫ রানে। একের পর উইকেট হারানোর ভিড়ে চোখেমুখে ধোঁয়া দেখছিল বাংলাদেশ। মাঝে মুশফিকুর রহিমও বিদায় নিলেন।

এরপর উইকেটে গিয়ে লেজের ব্যাটারদের নিয়ে আর কতটুকুই বা করার ছিল মাহমুদউল্লাহর। তিনি চেষ্টা করেছেন। কিন্তু আগের ম্যাচের মতো পারেননি শেষ পর্যন্ত টিকে থাকতে। দলীয় ১১৩ রানে বিদায় নেন মাহমুদউল্লাহ। ২০ রান করে তার বিদায়ের পর শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের সব আশা। বাংলাদেশকে থামিয়ে ইডেনে জয়ের রূপকথা লিখল স্কট এডওয়ার্ডসের দল। আর হেরে মাথা নিচু করে মাঠ ছাড়ল বাংলাদেশকে।